বিনিয়োগকারীদের আস্থাই শেয়ার বাজারের প্রকৃত মূলধন
একটি রায়
গত ৫ই মার্চ ২০০৪ খ্রীষ্ঠাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের এক আদালত শেয়ার কেলেঙ্কারীর এক মামলার রায় ঘোষণা করে। মামলার বিবাদী মিসেস মার্থা ষ্টূয়ার্ট (মিসেস ষ্টূয়ার্ট) এবং মিষ্টার পিটার ব্যাকানোভিচের (মিষ্টার ব্যাকানোভিচ) বিরুদ্ধে মূল্যসংবেদনশীল (গোপন) তথ্য ব্যবহার করে ImClone Systems Inc. (ImClone) কোম্পানীর ষ্টক বিক্রয়, মামলা তদন্তকারী সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট মিথ্য জবানবন্দী প্রদান ও মিসেস ষ্টূয়ার্টে নিজেস্ব কোম্পানী Martha Stewart Living Omnimedia Inc. (Stewart Living)-র ষ্টকে বিনিয়োগকারীদের ভূয়া তথ্য প্রদান মামলার অর্জিতে বলা হয়েছিল।
২৭শে ডিসেম্বর ২০০১ খ্রীষ্ঠাব্দে মিসেস ষ্টূয়ার্ট ImClone. নামক একটি জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানীর প্রতিটি ষ্টক গড়ে ৫৮.৪৩ মার্কিন ডলার মূল্যে মোট প্রায় ২২৯,৫০০ মার্কিন ডলারে বিক্রি করেন। পরের দিন শেয়ার বাজারের লেনদেন শেষ হওয়ার পর U.S. Food and Drug Administration (FDA) বা মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ মান নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষ ImClone কোম্পানীর Erbitux নামক ক্যান্সার রোগের ঔষধ উৎপদান ও বাজারজাত করার আবেদনপত্র পত্যাখ্যান করে। তার পরের দিন ৩১শে ডিসেম্বর শেয়ার বাজারে ImClone কোম্পানীর প্রতিটি ষ্টক ৪৫.৩৯ মর্কিন ডলার মূল্যে ক্রয় বিক্রয় শুরু হয়। মিসেস ষ্টূয়ার্ট যদি সেদিন শেয়ার বাজারে লেনদেন আরম্ভ হওয়ার সাথে সাথে উক্ত মূল্যে ষ্টক বিক্রয় করতেন তাহলে তিনি মোট ৫১,২০০ মার্কিন ডলার কম পেতেন।
ImClone কোম্পানীর ষ্টকের মূল্য ২০০২ খ্রীষ্টাব্দের মাঝামাঝি ১০ মার্কিন ডলারের নীচে নেমেছিল কিন্তু Erbitux নামক ক্যান্সার রোগের ঔষধ বাজারজাত কারার সম্ভাবনা থাকায় ষ্টকের মূল্য ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত ৫ই মার্চ ২০০৪ খ্রীষ্ঠাব্দে অপরাহ্নে ৪৭.২৬ মার্কিন ডলার মূল্যে ক্রয় বিক্রয় হয়।
মিসেস ষ্টূয়ার্ট এবং তার তৎকালীন ষ্টক দালাল, মিষ্টার ব্যাকানোভিচ দাবী করেন যে, তার সাথে মিসেস ষ্টূয়ার্টের কথা ছিল যে, সে ষ্টকের মূল্য ৬০ মর্কিন ডলারের নীচে নামলে ষ্টক বিক্রয় করে দিবে। কিন্তু মামলার বাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী উকিল বা সুকৌশলী অভিযোগ তুলেছেন যে, মিসেস ষ্টূয়ার্ট তার ষ্টক দালাল মিষ্টার ব্যাকানোভিচের তথা তার সহকারীর মিষ্টর ডাগলাস ফেন্যুইল (ফেন্যুইল)-এর সূত্রে প্রাপ্ত গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ভাল মূল্যে ষ্টক বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করেছে। মিষ্টার ব্যাকানোভিচের নির্দেশে তার সহকারীর মিষ্টর ফেন্যুইল মিসেস ষ্টূয়ার্টকে অবহিত কারেন যে, ImClone কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা মিষ্টর স্যামূয়েল ওয়াকছ্যালস (ওয়াকছ্যাল) ও তার কণ্যা মিসেস অ্যালাইজা ওয়াকছ্যাল (মিসেস অ্যালাইজা) তাদের কোম্পানীর ষ্টক বিক্রয় করার চেষ্টা করছেন।
কিছু গোপন তথ্য
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে কোন গোপন তথ্যের অপব্যবহার করে শেয়ার বাজারে লেনদেন ফৌজদারী মামলার দন্ডবিধির অর্ন্তভূক্ত। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বলা হয়েছে যে, ”মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আইন ও কতিপয় অন্যান্ন দেশের আইনে গোপন কোন তথ্য সংগ্রহ ও তা ব্যবহার করে ষ্টক নিজে ক্রয় বিক্রয় করে সুবিধা গ্রহণ বা অপরকে ষ্টক নিজে ক্রয় বিক্রয়ে পরামর্শ প্রদাণ করা বেআইনী। এমন ধরনের গোপন তথ্য অপরের নিকট প্রকাশ করা নিষেধ যা ব্যাবহার করে কেউ অন্যায় বা অসাধুভাবে ষ্টক ক্রয় বিক্রয় করার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।
এখানে তথ্য বলতে মূল্যসংবেদনশী তথ্য বা এমন সব বিষয় বস্তুকে বোঝানো হয়েছে যা প্রকাশিত হলে কেউ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ, ষ্টক ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বিবেচনা করতে পারে অথবা তা বাজারে ষ্টকের মূল্যকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সে সকল তথ্যকে গোপন বলে ধরা হবে যদি তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে সকলের জন্য উন্মুক্ত হয়নি। অপরদিকে সর্বজনিন তথ্য বলতে সে সকল বিষয় বস্তুকে বুঝতে হবে যা পরিষ্কারভাবে বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরত্বহীন।”
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ (১৫ নং আইন ১৯৯৩) এর ২৫ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে লেনদেন নিষিদ্ধ বিধিমালা ১৯৯৫ প্রণয়ন করে। তাতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান গেপন তথ্য নিজে ব্যবহার করে লেনদেন করলে বা অপরকে লেনদেন করতে সাহায্য করলে বা কোন প্রকার গেপন তথ্য সরবরাহ করলে তা দন্ডনীয় হবে। এ বিধিমালায় কোন কোম্পানীর পরিচালক, সংখ্যাগুরু অংশীদার, ম্যানাজিং এজেন্ট, ব্যাঙ্কার, হিসাব নিরীক্ষক, উপদেষ্টা, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদিগ এবং তাদের সাথে সম্পার্কত ব্যাক্তিবর্গকে আভ্যন্তরীণ সূত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে যারা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য পেতে পারে।
মামলার বিবাদীগণ
সিসেস মার্থা ষ্টূয়ার্ট – নিউ ইয়র্ক শহরের নামী, দামী হাই সোসাইটির একজন অতি পরিচিত ব্যক্তিত্ব সিসেস মার্থা ষ্টূয়ার্ট। তিনি ৮ই মার্চ ১৯৪১ খ্রীষ্ঠাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সী প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ষাটের দশকে জনপ্রিয় মডেল, সত্তরের দশকে ষ্টক দালাল, আশির দশকে নিজেস্ব কোম্পানীর তৈরী ও নব্বই দশকের প্রথম দিক থেকে টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিচিত ও প্রিয় মুখ। তিনি এ মামলার রায়ের পূর্ব পর্যন্ত তার কোম্পানী Martha Stewart Living Omnimedia Inc.-র নির্বাহী পরিচালিকা পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি জুন থেকে অক্টোবর ২০০২ খ্রীষ্ঠাব্দ পর্যন্ত New York Stock Exchange, Inc.-র পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম পরিচালিকা ছিলেন। ফরচুন ম্যাগাজিন ২০০১ খ্রীষ্ঠব্দে মিসেস ষ্টূয়ার্টকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ৫০ জন সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মহিলাদের মধ্যে তাকে ১৩শ পদে এবং একই বছরে ফরবস্ ম্যাগাজিন তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪০০ জন সবচে ধনাঢ্য ব্যাক্তিগণের মধ্যে ৩৮১তম পদে ভূষিত করে।
মিষ্টার পিটার ব্যাকানোভিচ – জন্ম ২১শে এপ্রিল ১৯৬২। তিনি অক্টোবর ১৯৯৩ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ পর্যন্ত American Pegasus Investment Management Inc. কোম্পানীতে ও অক্টোবর ১৯৯৩ থেকে অক্টোবর ২০০২ পর্যন্ত Merrill Lynch কোম্পনীতে নিয়েজিত ছিলেন। তিনি সিকিউরিটিজ সিরিজ ৭, ৬৩ এবং ৬৫ অনুজ্ঞাপত্রধারী ষ্টক দালাল। তার মক্কেলদের মাধ্যে রয়েছেন মিসেস ষ্টূয়ার্ট, মিষ্টার ওয়াকছ্যাল এবং তার কণ্যা মিসেস ওয়াকছ্যাল।
গত জুন ২০০২ খ্রীষ্ঠাব্দে Merrill Lynch তাকে চাকুরী থেকে অনির্ধারিত সময়ের জন্য বরখাস্ত ও পরে একই বছরের অক্টোবর মাসে তাকে চাকুরী থেকে ইস্তফা দেয়।
মিষ্টার ব্যাকানোভিচের সাথে মিসেস ষ্টূয়ার্টের পরিচয় আশির দশকের মাঝামাঝি এবং নব্বইয়ের মাঝামাঝি থেকে তার অন্যতম গুরত্বপূর্ণ মক্কেল।
মিষ্টার ব্যাকানোভিচের সাথে মিষ্টার ওয়াকছ্যালের পরিচয় ১৯৮৯ খ্রীষ্ঠাব্দ থেকে মিষ্টার ওয়াকছ্যালের এক বন্ধুর মাধ্যমে। মিষ্টার ওয়াকছ্যালের আমন্ত্রণে তার কোম্পানীর বিপণণ বিভাগে জুন ১৯৯০ থেকে জুলাই ১৯৯২ পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলেন। মিষ্টার ওয়াকছ্যালের ১৯৯৪ খ্রীষ্ঠাব্দে যখন মিষ্টার ব্যাকানোভিচ Merrill Lynch কোম্পনীতে ষ্টক দালাল হিসেবে নিয়োজিত তখন তার মক্কেল হন।
অন্যান্ন গুরত্বপূর্ণ ব্যাক্তগণ
মিষ্টার স্যামূয়েল ওয়াকছ্যাল – জন্ম ৪ঠা সেপ্টেম্বর এপ্রিল ১৯৪৭। তিনি ImClone Systems Inc. কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা এবং মিসেস ষ্টূয়ার্টের পুরোনো বন্ধু। তার বিরুদ্ধে আলোচিত এ মামলাসহ নয়টি অতি মূল্যবান শিল্পকর্ম (আঁকা ছবি) ক্রয় কারার সময় প্রায় এক মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক মূল্য সংযোজক কর (মূসক) ফাঁকি দেওয়া অভিযোগ রয়েছে, যা তিনি পরে স্বীকার করেছেন। তিনি বর্তমানে সাত বছরের অধিক কারা ভোগ করছেন।
মিষ্টর ডাগলাস ফেন্যুইল – জন্ম ২৮শে আগষ্ট ১৯৭৫ ম্যাসেচুসেট্ প্রদেশের নিউটন শহরে। ভূতপূর্ব গবৎৎরষষ খুহপয কোম্পানীর কর্মচারী ও মিষ্টার ব্যাকানোভিচের সহকারী। তার বিরুদ্ধে গত বৎসর উপহার গ্রহণ করে ষ্টক কেলেঙ্কারীর কথা গোপন রাখার অভিযোগ রয়েছে যদিও তিনি এ মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন। উল্লেখ্য যে, মিষ্টর ফেন্যুইল এ মামলার প্রধান সাক্ষী।
ক্রমানুসারে মামলার গুরত্বপূর্ণ তারিখসমূহ
৩১শে অক্টোবর, ২০০১: ImClone Systems Inc. কোম্পানী কতৃক উদ্ভাবিত Erbitux নামক ক্যান্সার রোগের ঔষধ বাজারজাত করার জন্য U.S. Food and Drug Administration (FDA) বা মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ মান নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষের সমীপে আবেদনপত্র দাখিল।
২৬শে ডিসেম্বর, ২০০১: ImClone Systems Inc. কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা মিষ্টার ওয়াকছ্যাল গোপন সূত্রে জানতে পারেন যে, সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কতৃক তার কোম্পানীর উদ্ভাবিত Erbitux নামক ক্যান্সার রোগের ঔষধ বাজারজাত করার আবেদন প্রত্যাখ্যন করবে। এ সংবাদের ভিত্তিতে মিষ্টার ওয়াকছ্যাল তার নিজের ষ্টক বিক্রয় কারার চেষ্টায় লিপ্ত হন এবং সাথে সাথে তিনি তার কণ্যা মিসেস অ্যালাইজা ওয়াকছ্যালকে বিষয়টি অবহিত করে তাকে তার ষ্টক বিক্রয় করার পরামর্শ দেন।
২৮শে ডিসেম্বর ২০০১: ImClone Systems Inc. কোম্পানী কতৃক উদ্ভাবিত Erbitux নামক ক্যান্সার রোগের ঔষধ বাজারজাত করার আবেদন মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ মন্ত্রণালয় পত্যাখ্যানের সংবাদ প্রকাশ করে।
৭ই জানুয়ারী ২০০২: মিসেস ষ্টূয়ার্টের ষ্টক দালাল মিষ্টার ব্যাকানোভিচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার মর্কিন Securities and Exchange Commission -এর নিকট জবানবন্দী প্রদান করেন যে, তার সাথে মিসেস ষ্টূয়ার্টের ২০শে ডিসেম্বর ২০০১ থেকে কথা ছিল যে, যখন ImClone ষ্টকের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলারের নীচে নেমে যাবে তখন তাকে তা বিক্রয় করে দিতে হবে।
৪ঠা ফেব্র“য়ারী ২০০২: মিসেস ষ্টূয়ার্ট মর্কিন Securities and Exchange Commission ও জাতীয় তদন্ত অধিদপ্তরের নিকট জবানবন্দী প্রদান করেন যে, তার সাথে মিষ্টার ব্যাকানোভিচের কথা ছিল যে, যখন ImClone ষ্টকের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলারের নীচে নেমে যাবে তখন তাকে তা বিক্রয় করে দিতে হবে।
১২ই জুন ২০০২: গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ষ্টক বিক্রয় করার অভিযোগে মিষ্টার ওয়াকছ্যাল গ্রেপ্তার হন। একই দিনে মিসেস ষ্টূয়ার্ট বিবৃতি প্রদান করেন যে, তার সাথে মিষ্টার ব্যাকানোভিচের কথা ছিল যে, যখন ওসঈষড়হব ষ্টকের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলারের নীচে নেমে যাবে তখন তাকে তা বিক্রয় করে দিতে হবে।
১৮ই জুন ২০০২: মিসেস ষ্টূয়ার্ট জানান যে, তিনি ষ্টক কেলেঙ্কারী তদন্তকারী সংস্থাসমূহের সাথে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের জন্য তিনি ”úূর্ণ” সহযোগিতা করছেন।
২রা অক্টোবর ২০০২: ভূতপূর্ব গবৎৎরষষ খুহপয কোম্পানীর কর্মচারী মিষ্টর ফেন্যুইল, মিষ্টার ব্যাকানোভিচের সহকারী উপহার গ্রহণ করে ষ্টক কেলেঙ্কারী সম্পর্কে নিশ্চুপ থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। এখানে উল্লেখ্য যে, মিষ্টার ব্যাকানোভিচের নির্দেশে মিষ্টর ফেন্যুইল মিসেস ষ্টূয়ার্টকে অবহিত কারেন যে, ওসঈষড়হব কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা মিষ্টার ওয়াকছ্যাল ও তার কণ্যা তাদের কোম্পানীর ষ্টক বিক্রয় করার চেষ্টা করছেন।
১৫ই অক্টোবর ২০০২: মিষ্টর ওয়াকছ্যাল স্বীকার করেন যে, তিনি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তার ষ্টক বিক্রয় কারার চেষ্টায় লিপ্ত হন এবং তার কণ্যা অ্যালীজা ওয়াকছ্যালকে বিষয়টি অবহিত করেন ও তাকে তার ষ্টক বিক্রয় করার পরামর্শ দেন।
৪ঠ জুন ২০০৩: মিসেস ষ্টূয়ার্ট এবং মিষ্টার ব্যাকানোভিচ ষ্টক কেলেঙ্কারীর দায়ে আইনতঃ অভিযুক্ত হন। দু’জনেই নিজ নিজকে নির্দোষ বলে দাবী করেন। মিসেস ষ্টূয়ার্ট তার কোম্পানী Martha Stewart Living Omnimedia Inc.-এর চেয়ারওম্যান ও নির্বাহী পরিচালিকার পদ থেকে পদত্যাগ করেন। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম পরিচালিকা পদে বহাল থাকেন।
৫ই জুন ২০০৩: মিসেস ষ্টূয়ার্ট নিজেস্ব ওয়েরসাইট খুলে নিজের নির্দোষ দাবী করেন এবং ঘোষণা দেন যে, তিনি তার নির্দোষ প্রমাণ করতে লড়ে যাবেন।
১০ই জুন ২০০৩: আদালত মিষ্টার ওয়াকছ্যালকে সাত বৎসরের অধিক কারাদন্ডে দন্ডিত করে।
৭ই নভেম্বর ২০০৩: মার্কিন টেলিভিশন American Broadcasting Co. Inc. (ABC)-এর সাথে এক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে মিসেস ষ্টূয়ার্ট বলেন যে, তিনি কারাদন্ডের শাস্তিকে ভয় পান বটে তবে ”আমাকে কারাগারে যেতে হবে বলে মনে করি না।”
১৮ই নভেম্বর ২০০৩: মার্কিন জেলা আদালতের বিচারনেত্রী মিসেস মিরিয়াম গোল্ডম্যান ছেডারবাউম মিসেস ষ্টূয়ার্ট কতৃক তার বিরুদ্ধে আনীত মোট পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দু’টি অভিযোগ প্রত্যাহার কারার আবেদন নকোচ করে দেন।
২৬শে জানুয়ারী ২০০৪: আটজন পুরুষ ও চারজন মহিলা জুরি নির্বাচন সম্পন্ন।
২৭শে জানুয়ারী ২০০৪: বাদীপক্ষ আদালতে মামলা শুনানীর প্রথম দিনে অভিযোগ তুলে ধরে যে, মিসেস ষ্টূয়ার্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওসঈষড়হব কোম্পানীর ষ্টক বিক্রয় করে বেআইনীভাবে মুনাফা লুটেছে এবং পরবর্তীতে মিথ্যা জবানবন্দী প্রদান করে তার অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করেছেন।
৩-৪ঠা ফেব্র“য়ারী ২০০৪: মিষ্টার পিটার ব্যাকানোভিচের সহকারী মিষ্টর ডাগলাস ফেন্যুইল জবানবন্দী প্রদান করেন যে, মিষ্টার পিটার ব্যাকানোভিচ তাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন মিসেস ষ্টূয়ার্টকে অবহিত করার জন্য যে, মিষ্টার ওয়াকছ্যাল তার কোম্পানীর ষ্টক বিক্রয় করছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, মিষ্টার ব্যাকানোভিচের তাকে এ ব্যাপারের বারংবার চাপ প্রয়োগ করেছেন।
১০ই ফেব্র“য়ারী ২০০৪: মিসেস ষ্টূয়ার্টের সহকারী মিসেস এ্যান আর্মষ্ট্রং জবানবন্দী প্রদান করেন যে, যেদিন মিসেস ষ্টূয়ার্ট তার ষ্টক বিক্রয় করেছে সেদিন মিষ্টার ব্যাকানোভিচের এক টেলিফোন সংবাদ (সম্ভবতঃ ভয়েস ম্যাসেজ) মিসেস ষ্টূয়ার্ট স্বয়ং পরিবর্তন করেছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, তাকে পরিবর্তিত টেলিফোন সংবাদটি পুনঃপরিবর্তন করে আদি অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তবে তাকে কখনও কোন প্রকার চাপ প্রয়োগ কারা হয়নি।
১৯শে ফেব্র“য়ারী ২০০৪: বিশেষজ্ঞগণ জবানবন্দী প্রদান করেন যে, মিষ্টার ব্যাকানোভিচের কলমের যে কালি দিয়ে ImClone কোম্পানীর ষ্টকের পাশে ”৬০” মার্কিন ডলার লিখে প্রমাণ হিসেবে যে দলিল জমা দিয়েছিলেন, সে কালির সাথে উক্ত দলিলে ব্যবহৃত অপর কালির কোন প্রকার মিল নেই।
মিসেস ষ্টূয়ার্টের এক বান্ধবী মিসেস মারিয়ানা প্যাষ্টারন্যাক জবানবন্দী দেন যে, ওসঈষড়হব কোম্পানীর ষ্টক বিক্রয়ের কায়েকদিন পর মিসেস ষ্টূয়ার্ট তাকে বলেছিলেন যে, তিনি মিষ্টার ওয়াকছ্যালের ষ্টক বিক্রয় সম্পর্কে পূর্বে অবহিত ছিলেন। তিনি আরও বলেন যে, ”এরকম দালাল থাকা কি মজার ব্যাপার না যে ঐ সকল বিষয় বলে?”
২০শে ফেব্র“য়ারী ২০০৪: জেরার মুখে মিসেস প্যাষ্টারন্যাক ” কি মজার ব্যাপার না যে…” বিষয়টি এ বলে প্রত্যাহার করেন যে, এব্যাপারে তিনি সম্পূর্ণ নিশ্চিত নন। এটা তার মনগড়া কথাও হতে পারে। সরকারী বাদীপক্ষ বিষয়টি স্থগিত ঘোষণা করে।
২৩শে ফেব্র“য়ারী ২০০৪: মিষ্টর ফেন্যুইলের প্রাক্তন ওকিলকে মিষ্টার জেরেমিয়া গুটম্যানকে মিষ্টার ফেন্যুইল প্রদত্ত জবানবন্দী সমর্থনের পরিবর্তে মিষ্টার ব্যাকানোভিচের সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন কারা হয়।
মিসেস হাইডি ডেলুকা নামক মিসেস ষ্টূয়ার্টের এক ব্যাবস্থাপিকা বলেন যে, তার মনে পড়ছে যে মিষ্টার ব্যাকানোভিচর তাকে বলেছিলেন যে, মিসেস ষ্টূয়ার্টের ষ্টক ৬০ মার্কিন ডলার মূল্যে বিক্রয় কারার কথা ছিল।
২৫শে ফেব্র“য়ারী ২০০৪: মিসেস ষ্টূয়ার্টের আইনজীবিগণ শুধুমাত্র একজন ওকিলকে সাক্ষী করে যার কিছু নোট কৌঁসূলীদের জেরা হিসেবে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু কৌঁসূলীগণ টেপে ধারণকৃত প্রমাণ বাজিয়ে শোনান যে, মিষ্টার ব্যাকানোভিচ বলছেন যে, তিনি কখনও মিসেস ডলুকার সাথে ৬০ মার্কিন ডলার মূল্যে ষ্টক বিক্রয় করার কথা আলাপ করেননি।
২৭শে ফেব্র“য়ারী ২০০৪: বিচারনেত্রী মিসেস ষ্টূয়ার্টের বিরুদ্ধে ষ্টক প্রতারণার অভিযোগ বাতিল করেন। তবে তাকে তার নিজের কোম্পানীর গধৎঃযধ ঝঃবধিৎঃ খরারহম ঙসহরসবফরধ ওহপ.-এর ষ্টকে বিনিয়োগকারীদেরকে ৬০ মার্কিন ডলারের ঘটনা বলে প্রতারণা করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, কোন পাবলিক কোম্পানী বিনিয়োগকারী বা জনসাধারণের নিকট ভুল তথ্য প্রকাশ করে বিভ্রন্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে তা দন্ডনীয় অপরাধ।
৩রা মার্চ ২০০৪: জুরিগণ মামলার বিষয়বস্তু ও রায় নিয়ে আলোচনা বা বিতর্ক শুরু করেন।
৫ই মার্চ ২০০৪: মামলার রায় ঘোষণা। মিসেস ষ্টূয়ার্টকে আনীত সকল অভিযোগে অভিযুক্ত করে দোষী সাব্যস্ত।
মিসেস ষ্টূয়ার্টের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ
মিথ্যা জবানবন্দী: অন্যান্য অভিযেগের মধ্যে মিসেস ষ্টূয়ার্ট মর্কিন সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন, তদন্ত অধিদপ্তর ও বাদীপক্ষের নিকট মিথ্যা জবানবন্দী প্রদান; মিসেস ষ্টূয়ার্টের সাথে তার ষ্টক দালাল মিষ্টার পিটার ব্যাকানোভিচের কথা ছিল যে, যখন ওসঈষড়হব ষ্টকের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলারের নীচে নেমে যাবে তখন তাকে তা বিক্রয় করে দিতে হবে। রায়: দোষী
মিথ্যা জবানবন্দী: অন্যান্য অভিযেগের মধ্যে মিসেস ষ্টুয়ার্ট মর্কিন সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন, তদন্ত অধিদপ্তর ও বাদীপক্ষের নিকট মিথ্যা জবানবন্দী প্রদান; মিসেস ষ্টূয়ার্ট মনে করতে পারছেন না যে, তিনি ২৭ ডিসেম্বর ২০০১ খ্রীষ্টাব্দে সংবাদ পেয়েছেন যে, ওসঈষড়হব কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা মিষ্টর ওয়াকছ্যাল ও তার কণ্যা তাদের কোম্পানীর ষ্টক বিক্রয় করছেন। রায়: দোষী
ষড়যন্ত্র: মিসেস ষ্টূয়ার্ট ও মিষ্টার ব্যাকানোভিচ ”ইচ্ছাকৃতভবে এবং জ্ঞাতসারে” একত্রে বিচারকার্যে বধা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র করেছে ও ষ্টক কেলেঙ্কারী সম্পর্কে মিথ্যা জবানবন্দী প্রদান করেছে। রায়: দোষী
বিচারকার্যে বাধা সৃষ্টি: জানুয়ারী থেকে এপ্রিল ২০০২ খ্রীষ্ঠাব্দ মিসেস ষ্টূয়ার্ট ”ইচ্ছাকৃতভবে এবং জ্ঞাতসারে” তার ষ্টক বিক্রয় সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রদান করে মর্কিন সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশনের তদন্তকার্যে বধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। রায়: দোষী
মিষ্টার ব্যাকানোভিচ বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ
মিথ্যা জবানবন্দী: মিষ্টার ব্যাকানোভিচ শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার মর্কিন সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন নিকট মিথ্য জবানবন্দী প্রদান করেছে যে, তার সাথে মিসেস ষ্টূয়ার্টের কথা ছিল যে, যখন ওসঈষড়হব ষ্টকের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলারের নীচে নেমে যাবে তখন তাকে তা বিক্রয় করে দিতে হবে। রায়: দোষী
ভূয়া প্রমাণ তৈরী ও ব্যাবহার: মিসেস ষ্টূয়ার্টের পর্টফোলিওর কাগজ পরিবর্তন করেছে যাতে প্রমাণীত হয় যে, তার সাথে মিসসে ষ্টূয়ার্টের পূর্বনির্ধারিত ছিল যে, যখন ওসঈষড়হব ষ্টকের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলারের নীচে নেমে যাবে তখন তাকে তা বিক্রয় করে দিতে হবে। রায়: নির্দোষ
আদালতে মিথ্য শপথ: মিষ্টার ব্যাকানোভিচ ১৩ই ফেব্র“য়ারী ২০০২ খ্রীষ্ঠাব্দে মর্কিন সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন কতৃক জেরাকালে আদালতে শপথ করে মিথ্য জবানবন্দী প্রদান করেছে, বিশেষ করে মিসসে ষ্টূয়ার্টের সাথে ষ্টক বিক্রীর সপ্তাহগুলোতে তার আলাপ সম্পর্কে, পূণরাবৃত্তি করেছে। রায়: দোষী
বিচারকার্যে বাধা সৃষ্টি: জানুয়ারী থেকে এপ্রিল ২০০২ খ্রীষ্ঠাব্দ মিষ্টার ব্যাকানোভিচ ”ইচ্ছাকৃতভবে এবং জ্ঞাতসারে” তার ষ্টক বিক্রয় সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রদান করে মর্কিন সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশনের তদন্তকার্যে বধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। রায়: দোষী
দন্ড: প্রতিটি অভিযুক্ত অভিযোগে দোষী সব্যস্ত পাঁচ বৎসরের সশ্রম কারা দন্ড ও ২,৫০,০০০ মার্কিন ডলার অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে যদিও জাতীয় মার্কিন দন্ডবিধি এ দন্ড হ্রাস করতে পারে।
শেয়ার বাজারে রায়ের প্রভাব
এ মামলার রায় ঘোষিত হওয়ার সাথে সাথে লেনদেনের পরিমাণের হিসেবে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ষ্টক একচেঞ্জ, নিউ ইয়র্ক ষ্টক একচেঞ্জ ও ওয়াল ষ্ট্রীট পাড়ায় আনন্দ ও স্বস্থির পরিবেশ ফিরে আসে। অনেককেই বলতে শোন যায় যে, এ রায় শুধু ImClone কোম্পানীর ষ্টকে বিনিয়োগকারীদের জন্য নয় বরং সকল বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা বিজয়। কারণ, মিসেস মার্থা ষ্টূয়ার্টের বিশেষ পরিচিতি, খ্যতি ও অর্থজোরের সুবাদে তার বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে এমন কঠোর রায় অনেকেই আশা করতে পারেনি।
এ রায়রের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণীত হল যে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় পূজিবাজার, শেয়ার বাজারের প্রশ্নে কাউকে ক্ষমা করে না।
তা ছাড়া বর্তমান মার্কিন অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান দুর্বলতার প্রেক্ষাপটে মার্কিন অর্থনীতির নভিস্থল শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করতে না পারলে রাজনৈতিক ক্ষমতাধরদের যে গদি রক্ষা হবে না তা সকলেরই জানা। ভুলে গেলে চলবে না যে, এ বছরের* (২০০৪) নভেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রষ্ট্রপতি নির্বাচন। ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, রেকর্ড পরিমাণ বাজেট ঘাটতি, যুদ্ধের অর্থায়ন, ইউরোর তুলনায় অতি দুর্বল মার্কিন ডলারের বিনিময় হার, ইরাকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা ইত্যাদি মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন সময় ভাল যচ্ছেনা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দী দলগুলো এবং তাদের ভোটদাতাগণ এ সব ভাল করেই জানেন।
এনরন, ওয়ার্ল্ডকমসহ বহু কোম্পানী দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা এখনও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি যদিও স্বয়ং মার্কিন রাষ্ট্রপতি শেয়ার বাজারের সকল প্রকার প্রতারণার পথ কঠোর হস্তে দামন করার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই এ মামালার রায় সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়েছে বলে পর্যবেক্ষকগণ মন্তব্য করছেন।
বাংলাদেশেও শেয়ার বাজারের সঠিক দিক নির্দেশনার ও স্বচ্ছতার অপেক্ষায় রয়েছেন বিনিয়েগকারীগণ। কারণ, বিনিয়োগকারীদের অস্থাই শেয়ার বজাররের মূলধন। -: সমাপ্ত :-
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। কাউছার ভূইয়াঁ ১৯৯১ – ২০১১।